পিরোজপুরে আওয়ামী লীগ নেতার মেয়েকে অপহরণের চেষ্টা ও বরপক্ষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মেয়ের বিয়ে ভণ্ডুল করে দেওয়ার অভিযোগে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অনিরুজ্জামান অনিককে প্রধান আসামি করে সদর থানায় মামলা করা হয়েছে। তবে মেয়েটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে দাবি করেছেন, তার বাবা তাকে বাড়িতে আটকে রেখেছেন এবং তাকে অপহরণের কোনো চেষ্টা হয়নি। তিনি এই ‘ষড়যন্ত্র’ থেকে মুক্তি চান।
পিরোজপুর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি দেলোয়ার হোসেন শনিবার রাতে মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ‘গত শুক্রবার বাদ আসর তার নিজ বাসভবনে মেয়ে পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী ফারহানা আক্তার আইভির বিয়ের আকদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিকেলে জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার কালাইয়া গ্রামের বাসিন্দা মাস্টার সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে বর জাহিদুল রহমানসহ বরপক্ষ আত্মীয়স্বজন নিয়ে তার বাড়িতে আসেন। আকদ অনুষ্ঠান শুরুর আগেই পিরোজপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অনিরুজ্জামান অনিক অনুসারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে বাড়িতে ঢুকে তার মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ধস্তাধস্তি করে মেয়েকে শ্নীলতাহানিরও চেষ্টা করে তারা। পিস্তল বের করে তারা সবাইকে ভয় দেখায়। এ ঘটনার পর বরপক্ষের লোকজন বিয়ে বন্ধ করে বাড়িতে চলে যান।’ মামলায় অনিকসহ জেলা ছাত্রলীগের কর্মী আব্দুল আলিম (মেয়েটির প্রেমিক), মো. শাওনসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়। সদর থানার ওসি নুরুল ইসলাম বাদল মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে নিজেকে অপহরণের চেষ্টা ও মামলা দেওয়ার বিষয় নিয়ে ফারহানা আক্তার আইভি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে তার ব্যক্তিগত আইডি ‘ভধৎযধহধরাু’ থেকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তাতে তিনি লিখেছেন, ‘আমাকে জোরপূর্বক বাসায় আটকে রাখা হয়েছে। আমি বিবাহ করতে রাজি না এই মুহূর্তে। অপহরণ ও ধস্তাধস্তি আমার সঙ্গে কেউ করেনি। আলিম ও তার বন্ধুবান্ধবের নামে যে মামলা ও ষড়যন্ত্র হয়েছে, এগুলো কোনোটিই আমি চাই না। আমি বিবাহ ও এই ধরনের মানসিক ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তি চাই। আল্লাহ তুমি রহম করো।’
এমন স্ট্যাটাসের বিষয়ে মেয়েটির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে মেয়েটির বাবা দেলোয়ার হোসেন বলেছেন, তার মেয়ের নামে থাকা ইনস্টাগ্রাম হ্যাক করে এমন স্ট্যাটাস লেখা হয়েছে।