এম মিজানুর রহমান লিটন, যশোর প্রতিনিধিঃ
যে খেলার ভেতরে প্রাণ নেই, সেতো খেলা নয়, জুয়া”। সেই স্তরে আজ কিশোর ও যুব সমাজ। সভ্যতা উন্নয়নের জোয়ারে গ্রাম প্রধান বাংলাদেশের সব জায়গায় কিশোর বা যুবক কারোরই তেমন পরিচিতি নেই খেলার মাঠের সাথে। অথচ লেখাপড়ার পাশাপাশি কিশোরদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা রাখে খেলাধুলা। এমনকি মাদকাসক্তি ও জঙ্গিবাদসহ সকল অসামাজিক কর্মকান্ড থেকে বিরত রাখতে খেলাধুলার ভূমিকা অসামান্য। খেলা যে আমাদেরকে শুধু বিনোদন দেয় এমন নয়, বরং আমাদের ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে জাতীয় জীবন পর্যন্ত-এর রয়েছে এক সুদূর প্রসারী প্রভাব। বর্তমানকালে যদিও বিনোদনের হাজারো উপাদান-উপকরণ সৃষ্টি হয়েছে তবু খেলার আবদান এতটুকুও কমেনি।
প্রেমবাগ সহ অভয়নগরের প্রায় সবখানে অবাক চোখ মেলে ঘুরে বেড়িয়েও চোখে পড়েনি বর্ষা মওসুমে কাদামাখা ফুটবল কিংবা হাডুডু। তবে সবখানে মিলেছে এনড্রয়েড ফোন, কি দারুন দেখতে সবারই উচু মাথা নিচু। কি নেই ফোনে? বিনোদনের কোন স্তর বাকি নেই এনড্রয়েডে।
বর্তমান প্রজন্মের আরও কিছু উপহার টিকটক পাবজি সহ হাজারো মোবাইল গেম, এ যেন খুনতা বানরের হাতে। গ্রাম্য প্রবাদ “বানরের হাতে খুনতা দিতে নেই”, দিলে সে তার অপব্যবহার করে। তথ্য প্রযুক্তির অপার কল্যাণে টিকটক ভিডিও এবং নানা রকম গেম বর্তমান প্রজন্মকে দিশেহারা করে ফেলেছে। সময়,অর্থ অপচয় করে মাদকাসক্তির চেয়ে ভয়াবহ এক নেশায় মেতেছে শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত এবং অশিক্ষিত আধা বয়সী থেকে শুরু করে প্রাইমারী স্তরের কচিকাঁচারা। পথে ঘাটে,রাস্তার মোড়ে, চায়ের দোকানে সর্বত্রই সারিবদ্ধভাবে ঘাড় নিচু করে দু’হাতে বিরতিহীন চেপে চলেছে হাতের স্মার্ট ফোনটি। কেউবা পাগলের মত একা একা হেসেই চলেছে টিকটক কমেডিতে। কিছুদিন আগেই ব্লু হুয়েল নামক মৃত্যুকে উৎসাহিত করা এক গেমের কবলে পড়েছিল তথ্য প্রযুক্তির নেগেটিভ দিকে ঝুকে যাওয়া আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম। বিশ্ব বাসীর চাপে গেমটি বন্ধ করেছিল আইরিশ গেম ইনভেন্টর ব্রান্ডান গ্রীন। থেমে থাকেননি তিনি, এবার পাপজি ( Player unknown’s Battle ground) আবিষ্কার করে আমাদের নাচনেয়ালীদের কাছে ঢোলের বাড়ি দিয়েছেন। চাইনিজ ভদ্রলোক থ্যাং ইয়ামিং টিকটক ভিডিও আবিষ্কার করে মহৎ কিছু করতে চাইলেও আমাদের মত অসচেতন জাতির যুবশক্তি কে অপ্রয়োজনীয়, অশ্লীল কথা চর্চার ক্ষেত্র দেখিয়েছেন। বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে খুব শীঘ্রই আমাদের স্কুল কলেজ পড়ুয়ে সন্তানেরা পাবজি আর টিকটকের ছোবলে বিষাক্ত চরিত্র এবং মানসিকতার ধারক হয়ে উঠবে।
অভিভাবকদের সচেতন এবং সাবধান হওয়ার সময় এসেছে। একটু সচেতনতা পারে আমাদের কিশোর, তরুন এবং যুব সমাজ তথা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাচাতে।
উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে বন্ধ হতে পারে মোবাইলে গেম খেলা এবং টিকটকের নামে ব্যাজ্ঞ বিদ্রুব ও অশ্লীল ভিডিও এবং বাঁচাতে পারে আমাদের কিশোর,তরুন এবং যুব সমাজকে, রক্ষা করতে পারে নিশ্চিত অবক্ষয়ের হাত থেকে এমনটিই চাওয়া সুশিক্ষিত, সচেতন এবং সাধারন মহলের।