পিরোজপুর জেলা প্রতিনিথিঃ পিরোজপুরে বিরোধীয় জমি দখলকে কেন্দ্র করে পৌর কাউন্সিলরের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী হামলা করে শিশু ও মহিলাদের মারধর করার প্রতিবাদে এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী একটি পরিবার। মঙ্গলবার পিরোজপুর প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন হামলার শিকার পরিবারের পুত্রবধু ইতি ইসলাম।
লিখিত বক্তব্যে ইতি ইসলাম অভিযোগ করে, পিরোজপুর পৌর এলাকার বাইপাস সড়কের সার্জিকেয়ার ক্লিনিকের সামনের একটি জমি নিয়ে তার শ্বশুর সেকান্দার আলী সিকদারের সাথে পিরোজপুর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল হাই এর দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। কাউন্সিলর হাই একটি জাল দলিল করে ৮ শতক জমি দখলের জন্য বিভিন্ন সময়ে পায়তারা করে আসছে। এ নিয়ে আদালতে মামলাও রয়েছে। ঘটনার দিন গত ৩০ আগষ্ট সকালে পৌর কাউন্সিলর আব্দুল হাই লোকজন নিয়ে জমি দখলের উদ্দেশ্যে তাদের (সেকেন্দার আলী) বসতবাড়িতে হামলা চালায়। এসময় তারা বাড়ির বৃদ্ধ, শিশু ও নারীদের উপর নির্যাতন চালায়। জমির মালিক সেকান্দার আলী সিকদারের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৭০) এগিয়ে এলে কাউন্সিলর হাই ও তার সহযোগীরা তাকে বেধরক মারধর করে। পিটিয়ে তার হাত ভেঙ্গে ফেলে। এ সময় হামলাকারীরা ফাতেমা বেগমের ছেলের বউয়ের উপর নির্যাতন চালায়। এ দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করতে গেলে ফাতেমা বেগমের কলেজ পড়ুয়া নাতনির উপরও নির্যাতন চালায় এবং মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। বাড়ির লোকজনকে রক্তাক্ত জখম করে বাড়ি ভাংচুর করে এবং ঘরে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা মূল্যের মালামাল লুট করে নেয়। এ সময় তারা সেকান্দার আরীর দখলে থাকা ৩/৪টি দোকান ঘর ভেঙ্গে ফেলে এবং তারকাটা দিয়ে হাটার পথসহ জায়গাটি ঘিরে দেয়।
দিনের বেলা মধ্যযুগীয় কায়দায় কাউন্সিলর আব্দুল হাই সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে হামলা করে শিশু ও নারীদের মারধর করে ভাংচুর ও লুটপাটের বিচার দাবী করেন ইতি ইসলাম। হামলার সাথে জড়িত পৌর কাউন্সিলর আব্দুল হাই সহ অন্য গ্রেফতারের দাবী জানান তিনি।
এদিকে, নারীসহ কয়েকজনকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগে পৌর কাউন্সিলর আব্দুল হাই সহ ১৭ জন নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১৫ জনকে আসামী করে ৩০ আগষ্ট রাতে পিরোজপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন আহত ফাতেমা বেগমের পুত্রবধু ইতি ইসলাম। পুলিশ এ মামলায় মিরাজ সেখ, মুসা ও আলআমীন নামে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে।
পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম বাদল জানান, জমি নিয়ে বিরোধের ঘটনায় হামলার সংবাদ পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনা হয়। আটকে দেয়া চলাচলের পথ ঠিক করে দেয়া হয়েছে। হামলার ঘটনায় ঐ দিন রাতেই একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং মামলার তিন আসামীকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে