লালমোহনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

    • আপডেট সময় : বুধবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২১

    এ .এইচ. রিপন ভোলা -জেলা প্রতিনিধি ॥

    ভোলার লালমোহন উপজেলার লালমোহন ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড মধ্য পেশকার হাওলা হাকিমিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহাজান এর বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রি, উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত ও বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত আসবাবপত্র বিক্রিসহ ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বৃহস্পতিবার ওই প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত মালামাল বিক্রির প্রস্তুতি নিলে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানায় স্থানীয়রা। এসময় সাংবাদিকরা ওই বিদ্যালয়ে গেলে পরিত্যক্ত মালামাল বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। তবে এসময় বিদ্যালয়ের মাঠে ওইসব মালামাল ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়, একইসাথে ভাঙারী ক্রয়কারী হকারকেও ওই মালামালগুলো সাজাতে দেখা যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক জানান, পরিত্যক্ত মালামালগুলো যে ভবনে রাখা হয়েছে, ওই ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করায় সেখান থেকে মালামালগুলো অন্যত্র সরিয়ে রাখা হচ্ছে। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির অবর্তমানে প্রায়ই বিদ্যালয়ের গাছ ও পরিত্যক্ত মালামাল বিক্রি করেন প্রধান শিক্ষক। এমন অভিযোগ তুলে মো. শহীদ নামের এক ব্যক্তি বলেন, প্রায় কয়েকমাস আগে বিদ্যালয়ের কিছু গাছ বিক্রি করেছিলেন প্রধান শিক্ষক। তবে গাছ বিক্রির বিষয়ে জানতো না বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি। স্থানীয় ভাঙারী হকার কামাল জানায়, প্রায় মাস তিনেক আগে ওই প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত টুল টেবিলের প্রায় ৪/৫হাজার লৌহ জাতীয় মালামাল কিনেছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, প্রধান শিক্ষক শাহাজানের জাল জালিয়াতির কাছে অতিষ্ট হয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক সভাপতি আবদুল বারেক। তিনি জানান, প্রায় পাঁচ বছর যাবৎ মধ্য পেশকার হাওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিলেন তিনি। ওই সময়ও বিদ্যালয়ে মাসিক মিটিং না করে সদস্য এমনকি সভাপতির স্বাক্ষরও জাল করতেন তিনি। এছাড়াও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতসহ নানা অভিযোগ আসতো প্রায়ই। এসব বিষয়ে শিক্ষক শাহাজানকে বাঁধা দিতে গিয়ে তার চক্ষুশূল হয়ে উঠি। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২০১৮ সালে সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে চলমান কমিটি বিলুপ্ত করে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে নতুন কমিটির আবেদন করে প্রধান শিক্ষক শাহাজান। ওই কমিটিতে বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার বাইরের লোককে সভাপতি দেখানো হয়েছে, যা ম্যানেজিং কমিটি গঠনের নিয়ম বহির্ভূত। তবে এসব বিষয়গুলো উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসও অবগত রয়েছে। তবে প্রধান শিক্ষক শাহাজানের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নেয়ায় দিনদিন তার অনিয়ম বেড়েই চলেছে বলেও অভিযোগ সাবেক এ সভাপতির। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মধ্য পেশকার হাওলা হাকিমিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহাজান পরিত্যক্ত মালামাল, গাছ বিক্রি ও সাবেক সভাপতির স্বাক্ষর জাল করার বিষয়টি অস্বীকার করেন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আকতারুজ্জামান মিলন বলেন, প্রধান শিক্ষক শাহাজানের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে প্রধান শিক্ষক শাহাজানের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত না থাকলেও অদৃশ্য কারণে পার পেয়ে যাওয়া নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার দেখা দিয়েছে। তাই এসব অনিয়ম তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।

    Share This Post in Your Social Media

    Comments are closed.

    More News Of This Category
    All rights reserved © Tech Business Development Ltd.
    Support BY TechITBD
    error: Content is protected !!