নড়াইল প্রতিনিধি,খন্দকার সাইফুলঃ আর্ন্তজাতিক শিশু শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত সাদাত রহমান সাকিবকে নড়াইল প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে ফুলের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এর আগে শনিবার দুপুরে যশোর বিমানবন্দর থেকে সাদাত রহমানকে নড়াইলে নিয়ে আসেন তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আব্দুল হাই ডিগ্রী কলেজের শিক্ষকবৃন্দ এবং তার সংগঠনের সদস্যরা। বিমানবন্দরে তাকে ফুলের শুভেচ্ছা জানান আব্দুল হাই ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান মল্লিক। শনিবার ‘শিশুদের নোবেল’ খ্যাত শিশু শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত সাদাত রহমান সাকিব নড়াইল পৌঁছালে নড়াইল প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে তাকে ফুলের শুভেচ্ছা জানানো হয়। এসময় নড়াইল প্রেসক্লাবের সভাপতি এনামুল কবীর টুকু, সাধারণ সম্পাদক শামীমূল ইসলাম টুলুসহ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় সাদাত রহমান বলেন, ৪২টি দেশের ১৪২ জন শিশু এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে দেশের সম্মান বয়ে আনতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে। পুরস্কারের সমুদয় অর্থ দেশের শিশু-কিশোরদের সুরক্ষায় ব্যয় করা হবে। আগামীতে আরও ভালো কিছু করার ইচ্ছা রয়েছে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। শিশুদের অধিকার ও নিরাপত্তার বিষয়ে অবদানের জন্য নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক সংগঠন ‘কিডস-রাইটস’ প্রতিবছর এ পুরস্কার দিয়ে থাকে। অনলাইনে শিশু নির্যাতন বন্ধে সচেতনতামূলক অ্যাপ ‘সাইবার টিন’ বানানোর স্বীকৃতি হিসেবে ১৭বছর বয়সী সাদাতকে এ পুরস্কার দেয়া হয়েছে। ১৩ নভেম্বর নেদারল্যান্ডের হেগে এক অনুষ্ঠানে মানবাধিকার কর্মী ও ২০১৪ সালে নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই অনলাইনে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে সাদাতকে এই পুরস্কার দেন।
জানা যায়, সাদাত রহমান নড়াইলের পাশ্ববর্তী মাগুরা জেলার সদর উপজেলার আলোকদিয়া গ্রামে ২০০৩ সালের ১৪ মে জন্ম গ্রহণ করেন। ডাক নাম সাকিব। সাকিবের বাবা মো.সাখাওয়াত হুসাইন ও মা মলিনা বেগম। ২০১৭ সালে নড়াইল ডাক বিভাগে জেলা পোস্ট মাস্টার পদে বদলী হয়ে আসেন। তখন বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান সাকিবকে নড়াইল সরকারি বালক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণীতে ভর্তি করান তিনি। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় বন্ধুদের সঙ্গে ‘নড়াইল ভলানটিয়ারস’ নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ওই স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। বর্তমান ১৭ বছর বয়সী সাদাত নড়াইল আবদুল হাই সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। বর্তমান মায়ের সঙ্গে বসবাস করেন নড়াইল জেলা ডাক বিভাগের কোয়ার্টারে। ২০১৭ সাল থেকেই চিত্রা পাড়ের শহর নড়াইলের আলো-বাতাসেই বেড়ে ওঠেছেন তরুণ চেঞ্জমেকার ও সমাজসংস্কারক সাকিব। সাদাত রহমান সাকিব ও তার দল সাইবার বুলিং ও সাইবার ক্রাইম থেকে শিশু-কিশোরদের রক্ষায় নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। গতবছর সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়ে দশম শ্রেণী পড়ুয়া এক কিশোরীর (১৫) আত্মহত্যার পর কাজে নামে সাদাত। সে তাঁর বন্ধুদের সহায়তায় গড়ে ওঠা সামাজিক সংগঠন ‘নড়াইল ভলেন্টিয়ারস’ বেসরকারি সংস্থা অ্যাকশন এইডের ‘ইয়ুথ ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ-২০১৯’এ বিজয়ী হয়ে তহবিল পায়। এই তহবিলের মাধ্যমে তারা ২০১৯ সালের ৯ অক্টোবর ‘সাইবার টিনস’ মোবাইল অ্যাপ তৈরি করে।
প্রসঙ্গত, সাকিবের বাবা মো.সাখাওয়াত হুসাইন সম্প্রতি কুষ্টিয়াতে বদলী হয়ে যান। কিন্তু সাদাত রহমান সাকিব আব্দুল হাই ডিগ্রী কলেজের ছাত্র হওয়ায় পড়াশোনার কারণে নড়াইলে বসবাস করছেন।###
খন্দকার সাইফুল
নড়াইল
২১/১১/২০
০১৭২৪৩২৬০৮৫