স্টাফ রিপোর্টারঃ নড়াইলের কালিয়ায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এর আওতায় ১৩ কোটি টাকা ব্যায়ে সড়ক উন্নয়ন কাজে ব্যাপক অনিয়ম পাওয়া গেছে। নির্মান কাজ চলা অবস্থায় উঠে যাচ্ছে নির্মিত কার্পেটিং ও ভেঙে পড়েছে নতুন নির্মিত রাস্তার একটি অংশ। এছাড়া কালিয়া পাবলিক লাইব্রেরী থেকে উপজেলার বড়দিয়া কলেজ মোড় পর্যন্ত রুরাল কানেকটিভিটি ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট নামের উন্নয়ন কাজটিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
কালিয়া উপজেলা প্রকৌশলীর অফিস থেকে জানা যায়, নড়াইল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর আওতায় এন. সি. ই.এল-পি.ডি.এল (জেভি) নামের ১০৫,মধ্য বাড্ডা,ঢাকা-১২১২ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি এ কাজটি করছেন। কাজের জন্য চুক্তিমূল্য ১৩ কোটি ৩৩ লক্ষ ৫৩ হাজার ২৪৩ টাকা ধরা হয়েছে। সড়কের ১১ হাজার ২২০ মিটার এবং সড়কের চওড়া ৫.৫০ মিটার (১৮ফিট) করার কথা । সে অনুযায়ী চলতি বছর ৯ ডিসেম্বর কাজটি সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে , প্রকল্পের কাজ অত্যন্ত নিন্মমানের করা হচ্ছে। সড়কের শুড়িগাতি নামক স্থানসহ বিভিন্ন স্থানে নির্মিত কার্পেটিং ভ্যান ও গাড়ীর চাকায় উঠে যেতে শুরু করেছে। তালবাড়িয়া নামক স্থানে সড়কের পাশের বাড়ানো অংশ ভেঙে পড়েছে। কালিয়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খান শামীম রহমানসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেছেন, সড়কটি নির্মানে নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহারসহ ব্যাপক অনিয়ম করা হচ্ছে। তিনি সড়কটির নির্মান কাজে অনিয়মের জন্য উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি করেছেন। তিনি আরও বলেছেন, সাংবাদিকরাসহ স্থানীয় লোকজনের বিরুপ প্রতিক্রিয়ার কারনে সোমবার রাতে ঠিকাদারের লোকজন সড়কের বিভিন্ন স্থান থেকে উঠে যাওয়া কার্পেটিং মেরামত করছে।
এ প্রসঙ্গে সালামাবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দা শরীফ নাসির মাহমুদ অভিযোগ করে বলেছেন, কালিয়া-বড়দিয়া সড়কের নির্মাণ কাজ অত্যন্ত নিন্মমানের হচ্ছে। ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের যোগসাযোশে এ অনিয়ম হচ্ছে। কার্পেটিং করার পরই পায়ের আঘাতেই উঠে যাচ্ছে। এ সড়কে নিন্মমানের কাজ জনপ্রতিনিধিরা দেখেও দেখছেন না। যা দুঃখ জনক ঘটনা।
কালিয়া উপজেলা এলজিইডির ভারপ্রাপ্ত নকসাকার আলী আহম্মেদ এ কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকলেও তাঁকে ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের অন্য কাউকে কাজের সাইডে দেখা যায়নি। সড়কের চওড়া ১৮ফিট হওয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ জায়গায় তা নেই। যা সাংবাদিকদের নজরে আসে। তারা সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে। তবে সাংবদিকরা খোজ খবর নেয়ার পর গত সোমবার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত ঠিকাদারের লোকজন উঠে যাওয়া কার্পেটিং মেরামতের কাজে ব্যস্ত ছিল বলে জানা গেছে।
প্রকল্পের তদারকির দায়িত্বে থাকা আলী আহম্মেদ বলেছেন,‘কাজের গুনগত মান খারাফ নয়। তবে সড়কটি নির্মান কালে কাপেটিং উঠে যাওয়া ও একটি জায়গা ভেঙে পড়ার সত্যতা স্মীকার করে তিনি বলেছেন, এসব জায়গা সঠিক ভাবে করার জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। রাতের বেলায় কাজ করে ঠিকাদার নিজের দায়িত্বে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পিডিএলের দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন পেপার মেশিনের সমস্যার কারনে কিছু জায়গায় কার্পেটিং উঠে যাওয়ার সত্যতা স্মীকার করে বলেছেন, যেসব সমস্যা নিয়ে কথা উঠেছে সে বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশ মত সোমবার দিনে রাতে ঠিক করা হয়েছে। প্রাকৃতিক কারনে রাস্তার একটি জায়গা ডেবে গেছে।
নড়াইল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সুুজায়েত হোসেন বলেছেন,ওই সড়কের কাজের যে সমস্ত ত্রুটি আছে। কাজ হস্তান্তরের আগে তা ঠিক করে দিতে হবে।