পিরোজপুর জেলা প্রতিনিধিঃ দক্ষিণ-পূর্ব পশারীবুনিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়। পিরোজপুরে ভাণ্ডারিয়ার পশারীবুনিয়া গ্রামের এ বিদ্যালয়ের নামে কোনো জমি নেই, নেই বিদ্যালয়ের কোনো অস্তিত্ব। কিন্তু জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ ও বিদ্যালয়ের নামে জমি দেখিয়ে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। নিয়মিত বেতনও তুলছেন চার শিক্ষক। জানা যায়, এ নিয়ে আদালতে দু’টি মামলা হয়েছে। তবে অদৃশ্য শক্তির সহযোগিতায় টিকে আছে স্কুলটি। শনিবার সরেজমিন দেখা যায়, ১৯৯১ সালে প্রথমে মিজানুর রহমান লাল মিয়া হাওলাদারের বাড়ির সামনে যেখানে বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়, সেখানে বর্তমানে একটি পতিত জমি। বিদ্যালয়টির নামে নিজস্ব জমি বরাদ্দ না থাকার কারণে মৌখিকভাবে স্কুলটি স্থানান্তর করা হয় স্থানীয় আব্দুস সালাম হাওলাদারের বাড়ির পাশের বাগানে। সেখানে বিদ্যালয়ের কোনো সাইনবোর্ড পর্যন্ত নেই, দেখা যায় পরিত্যক্ত একটি কুঁড়ে ঘর। তবে বর্তমানে কাঠের নতুন স্কুলঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। অপর দিকে বিদ্যালয়ে ১৫০ জন ছাত্রছাত্রী কাগজে-কলমে থাকলেও প্রকৃতপক্ষে ক’জন আছে তা কেউ জানে না। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুস সালাম হাওলাদার অসুস্থ থাকায় তার ছেলে আরিফ বিল্লাহ বাদি হয়ে প্রধান শিক্ষক সীমা রানী গোলদার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার জালাল উদ্দিন খানসহ সহকারী শিক্ষকদের জড়িয়ে পাঁচজনের নামে পিরোজপুর জেলা স্পেশাল জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা সূত্রে জানা যায়, কমিটির সভাপতি ও জমির মালিক আব্দুস সালাম হাওলাদারের স্বাক্ষর জাল করে যাবতীয় কাগজপত্র তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের জন্য পাঠায়। ২০১৪ সালের পয়লা জানুয়ারি বিদ্যালয়টি সভাপতির অজান্তেই জাতীয়করণ হয়ে আসে। এ ছাড়াও বিদ্যালয়ের নামকরণ নিয়ে রয়েছে রহস্য। কখনো উল্লেøখ করা হয়, ১৬৪ নম্বর এবং কখনো ১৬৫ নম্বর। এ ছাড়া মাত্র ছয়জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে; কিন্তু শিক্ষকরা অতিরিক্ত ভুয়া ছাত্রছাত্রী দেখিয়ে উপবৃত্তির টাকাও উত্তোলনসহ প্রতিষ্ঠানের নামে পাওয়া সরকারি বই এনে তা কেজি মূল্যে বিক্রয় করে অর্থ আত্মসাৎ করছেন। এ দিকে অপর মামলাটি দায়ের করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক দাবিদার মো: শাহ আলম সিকদার। মামলা সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীন স্থানীয় সমাজসেবক খলিলুর রহমান দলিল মূলে ৫০ শতক জমি দান করে তার ওপর একটি স্কুলঘর নির্মাণ করে পাঠ দানের কার্যক্রম শুরু করেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সীমা রানী গোলদারের সাথে মোবাইলে যেগাযোগ করা হলে তার স্বামীকে ফোন ধরিয়ে দেন। তার স্বামী বলেন, সে ব্যস্ত আছে। পরে আবারো ফোন দিলে প্রধান শিক্ষক সীমা রানী বলেন, আমি একটি সভায় আছি। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: নাসির উদ্দীন খলিফা বলেন, বিদ্যালয়টি নিয়ে আদালতে একাধিক মামলা বিচারাধীন। মামলার রায় না হওয়া পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব নয়।