পিরোজপুর প্রতিনিধিঃ
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে যুবলীগের কর্মীসভায় ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা হাওলাদার মোয়াজ্জেম হোসেনের সমালোচনা করায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন কুমার মজুমদারকে (৫১) পিটিয়ে পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার রাতে উপজেলার চরণী পত্তাশী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এই ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত আওয়ামী লীগ নেতাকে উদ্ধার করে বুধবার রাতে খুলনার সিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, বুধবার বিকেলে উপজেলার চরনী পত্তাশী পাড়ের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে পত্তাশী ওয়ার্ড যুবলীগের কর্মীসভায় পত্তাশী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন কুমার মজুমদার তার বক্তব্যে চেয়ারম্যানের সমালোচনা করেন। এতে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন মোয়াজ্জেম ও তার সমর্থকরা। উত্তেজনা দেখে আওয়ামী লীগ নেতা রঞ্জন সভাস্থল ত্যাগ করেন। সভার মধ্য থেকে কয়েকজন নেতাকর্মী রঞ্জনকে ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে ক্ষমা চাইতে বলেন। কিন্তু রঞ্জন সভাস্থলে যেতে চাননি।
আহত রঞ্জন বলেন, আমি ওখানে গেলে আমাকে ওরা মারতে পারে। পরে দিপ্ত, দিবাস হালদার ও তুষারসহ স্থানীয় নেতাকর্মী রঞ্জনকে অভয় দিয়ে সভাস্থলে নিয়ে যাওয়ার পথে মোয়াজ্জেমের উপস্থিতিতে তার লোকজন লাঠি দিয়ে আমাকে বেধরক পেটাতে শুরু করেন। হামলাকারীরা পিটিয়ে আমার বাম পা ভেঙে ফেলে। এসময় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাহান খান এগিয়ে এলে তাকেও লাঞ্ছিত করে চেয়ারম্যানের সহযোগীরা। পরে স্থানীয়রা আহতাবস্থায় আমাকে উদ্ধার করেন। পরে চেয়ারম্যান তার লোকজন দিয়ে আমাকে রাতে খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান।
রঞ্জনের স্বজনেরা জানান, রঞ্জনকে কোন সরকারি হাসপাতালে ভর্তিরও সুযোগ দেওয়া হয়নি। এঘটনা নিয়ে এলাকার মানুষ এখন আতঙ্কিত।
রঞ্জন কুমার মজুমদার বলেন, ‘মোয়াজ্জেম ভুল করতে পারেন’ বক্তব্যে এমন কথা বলায় আমাকে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করেছে তার লোকেরা। আমি ভেবেছিলাম বাঁচতেই পারবো না। আমার হাঁটুর বাটি ভেঙে দুই ভাগ হয়ে গেছে। আমি মনে হয় পঙ্গু হয়ে যাবো। আমি আর রাজনীতি করবো না।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পত্তাশী ইউপি চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, রাতে যুবলীগের কর্মী সভার একটু দূরে কে বা কারা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের ওপর হামলা করেছে জানি না। তবে তার চিকিৎসা করানো হচ্ছে। সে তো আমার লোক, আমার লোকে কেন তার ওপর হামলা করবে!
ইন্দুরকানী থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবির বলেন, আমি লোকমুখে ঘটনাটি জানতে পেরেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আহত রঞ্জন মজুমদার খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।