খন্দকার সাইফুল নড়াইলঃ
আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন চিত্রশিল্পী এসএম
সুলতানের ২৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল ১০ অক্টোবর। ১৯৯৪ সালের ১০
অক্টোবর যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় মৃত্যুবরণ
করেন তিনি। নড়াইলের কুড়িগ্রামে তাকে শায়িত করা হয়।
এসএম সুলতান ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইলের মাছিমদিয়ায় বাবা
মেছের আলী ও মা মাজু বিবির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯২৮ সালে ভর্তি
হন নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুলে। স্কুলের অবসরে রাজমিস্ত্রি
বাবাকে কাজে সহযোগিতা করতেন শেখ মোহাম্মদ সুলতান। এ সময়ে
ছবি আঁকার হাতেখড়ি তার। সুলতানের আঁকা সেই সব ছবি স্থানীয়
জমিদারদের দৃষ্টি আর্কষণ হয়।
নড়াইলের জমিদার ব্যারিস্টার ধীরেন রায়ের আমন্ত্রণে ১৯৩৩ সালে রাজনীতিক
ও জমিদার শ্যামাপ্রাসাদ মুখোপাধ্যায় ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুল
পরিদর্শনে গেলে তার একটি প্রতিকৃতি (পোট্রেট) আঁকেন পঞ্চম
শ্রেণির ছাত্র সুলতান। মুগ্ধ হন শ্যামাপ্রাসাদসহ অন্যরা। লেখাপড়া ছেড়ে
১৯৩৮ সালে কলকাতায় গিয়ে ছবি আঁকা ও জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন।
সোহরাওয়ার্দীর সুপারিশে অ্যাকাডেমিক যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও
১৯৪১ সালে কলকাতা আর্ট স্কুলে ভর্তির সুযোগ পান সুলতান। ১৯৪৩
সালে আর্ট স্কুল ত্যাগ করে ঘুরে বেড়ান এখানে-সেখানে। সুলতানের
শিল্পকর্মের বিষয় ছিল বাংলার কৃষক, জেলে, তাঁতি, কামার, কুমার, মাঠ,
নদী, হাওর, বাঁওড়, জঙ্গল, সবুজ প্রান্তর ইত্যাদি। চিত্রাঙ্কনের পাশাপাশি
বাঁশি বাজাতে পটু ছিলেন।
চিত্রশিল্পের খ্যাতি হিসেবে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ম্যান অব দ্য
ইয়ার’, নিউইয়র্কের বায়োগ্রাফিক্যাল সেন্টার থেকে ‘ম্যান অব
অ্যাচিভমেন্ট’ এবং এশিয়া উইক পত্রিকা থেকে ‘ম্যান অব এশিয়া’
পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়া ১৯৮২ সালে একুশে পদক এবং ১৯৯৩ সালে
স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হন। ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের রেসিডেন্ট
আর্টিস্ট স্বীকৃতি এবং ১৯৮৬ সালে পান বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ
সম্মাননা।
সুলতানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সুলতান ফাউন্ডেশন ও জেলা প্রশাসনের
আয়োজনে আজ (রবিবার) সকালে শিল্পীর কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ,
জিয়ারত, মিলাদ মাহফিল, কোরআনখানি, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং
আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।